অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : আবহমান বাঙালী সংস্কৃতিতে জড়িয়ে আছে মেলা শব্দটি। যেখানে পণ্যের প্রচার প্রসার বেঁচাবিক্রি আর আনন্দ আয়োজন থাকবেই। নাগরিক কর্পোরেট সংস্কৃতিতে এসে রুপ বদলেছে এসব মেলার আয়োজন। নাম নিয়েছে নানা রুপে। দেশের অন্যতম বড় মেলা ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন কিনতে কিংবা ঘুরতেও।
স্থান পরিবর্তনের কারনে প্রথম দিকের কিছু অব্যবস্থাপনাকে পাশকাটিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি করে এখন বেশ জনসমাগম বাড়ছে বাণিজ্য মেলায়। চলতি বছরেও শুরু থেকেই ক্রেতাশূন্যতায় ভুগছিল নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে বসা ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। তবে কেনাবেচার জন্য ছুটির দিনের ভরসায় ছিলেন বিক্রেতারা। আর হয়েছেও তাই। পৌষের শেষে এসে কুয়াশাচ্ছন্ন দিনেও ছুটির আমেজ থাকায় ভিড় বেড়েছে মেলার বিভিন্ন স্টলে। তবে লোকসমাগম হলেও আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। কিন্তু আগত প্রায় সবার মধ্যেই ছিল উৎসবের আমেজ।
কথা হয় নারায়ণগঞ্জের দেলপাড়া থেকে আসা হাকিম চৌধুরীর সঙ্গে, রেডিও তেহরানকে তিনি বলেন পরিবার পরিজনের শখেই মেলায় আসা। অনেক কিছুই কেনাকাটার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তবে অনলাইন ও বাইরের দোকানের তুলনায় মেলায় পণ্যের দাম বেশি মনে হওয়ায় কেনাকাটা কম করেছেন তিনি তার পরিবারের সদস্যরা।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, মেলার অভ্যন্তরীণ প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলো কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। দেশীয় পোশাক, হস্তশিল্পজাত পণ্য, সাজসজ্জার সামগ্রী, পাটজাত পণ্য, প্লাস্টিক, মেলামিন, আসবাব ও কার্পেটসহ গৃহসজ্জার বিভিন্ন সরঞ্জাম, ব্যাগ-জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ইলেকট্রনিক পণ্য, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ ও ইমিটেশন জুয়েলারি পণ্যের স্টলের সামনে ক্রেতাদের বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ব্লেজারসহ অন্যান্য শীতের কাপড়ে দেওয়া হয়েছে বিশেষ ছাড়। এর ফলে বেড়েছে কেনাবেচা।
রাজধানীর ডেমরা থেকে মেলায় ঘুরতে আসা গৃহিনী তাসলিমা বেগম রেডিও তেহরানকে বলেন, মেলার সরকারি ছুটির দিন থাকায় লোকজন বেশি। ভিড় ঠেলে কেনাকাটা করতে হয়েছে। তবে সব কিছু একসঙ্গে পেয়ে ভালো লাগছে।
মিরপুরের বাসিন্দা আলী আহমদ ও তার স্ত্রী রুবিনা আহমেদের সঙ্গে কথা হয় রেডিও তেহরানের। তারা বলেন, একটু দূরে হওয়ায় মেলায় আসতে অসুবিধা হয়েছে। তবে মেলায় আসার পর পণ্য দেখে ও কিনতে পেরে খুব ভালো লাগছে তাদের।
গত ১ জানুয়ারি ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৭তম আসর শুরু হয়। মেলায় দেশি-বিদেশি মোট ৩৩১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি দেশের ১৭টি বিদেশি স্টল রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠান প্রথম সপ্তাহে আশানুরূপ বিক্রি করতে পারেনি। দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষে সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা বলছেন, বিক্রি আগের চেয়ে কিছুটা হলেও বেড়েছে। আয়োজকদের প্রত্যাশা এবার মেলা থেকে ৫শ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ পাওয়া যাবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার তৈরি পোশাকের পাশাপাশি আরও ১০টি পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান তারা।
Leave a Reply